হজরত ইবনে আব্বাস (রা.)-এর সূত্রে নবী করিম (সা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘রোগমুক্তি তিনটি জিনিসের মধ্যে নিহিত। এগুলো হলো- শিঙা লাগানো, মধু পান করা এবং আগুন দিয়ে গরম দাগ দেওয়া। তবে আমি আমার উম্মতকে আগুন দিয়ে গরম দাগ দিতে নিষেধ করি।’ –সহিহ বোখারি: ৫৬৮১

মাথায টাক পড়া সমস্যায় / চুলপড়া /নতুন চুল গজানোর জন্য একমাএ চিকিৎসা হিজামা cupping therapy

 

যাদের চুল পড়ছে, অল্প বয়সে টাক পড়ে ফাঁকা হচ্ছে মাথার তালু তাদের কাছে যদি চিকিৎসার ব্যাপারে জানতে চাওয়া হয়, তাহলে শতকরা ৯৫ ভাগ রোগীই বলবেন চুলের জন্যে যেসব চিকিৎসা তারা নিয়েছেন তাতে তারা সন্তুষ্ট ছিলেন না!
New York Times এর একটা প্রতিবেদনে উঠে এসছে চুলের পেছনে যে পরিমাণ মিলিয়ন মিলিয়ন ডলার গড় আমেরিকানরা খরচ করেন তার তুলনায় যে উপকার তারা পান সেটা অত্যন্ত নগন্য এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রে ক্ষণস্থায়ী!
এক অর্থে এই Hair Treatment ইন্ডাস্ট্রিটি আসলে বিক্রি করে মিলিয়ন ডলারের 'Hope'! আমরা টাকা দিয়ে 'আশা' কিনি - যদি লেগে যায় কোনভাবে!
পুরুষদের ক্ষেত্রে অল্প বয়সেই মাথার তালু থেকে চুল পড়ে যাওয়ার প্রধান কারন মাথার তালুর চুলের গোড়ায় যে Hair follicle রয়েছে তাতে মাত্রাতিরিক্ত Dihydrotestosterone (DHT) জমা হওয়া।
FDA approved যে দু'টো drug চুল পড়া বন্ধে বহুল ব্যবহার হয় তার একটি Minoxidil যা চুলের গোড়ার blood circulation উন্নত করে। কিন্তু প্রতিদিন ২ বার ১০ চাপ করে স্প্রে নিয়ম মেনে দেওয়া আসলে কঠিন! আবার সবার জন্যে যে এটি ফলদায়ক তাও কিন্তু নিশ্চিত না!
আরেকটি ড্রাগ Fenesteride DHT উৎপাদনে বাঁধা দেয়। কিন্তু sexual desire কে ক্ষতিগ্রস্ত করার ঝুঁকি এর ব্যবহার এর জনপ্রিয়তা কমিয়েছে।
PRP (Platelet rich plasma) চুল পড়া সমাধানে বর্তমান সময়ে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে। আমরা অনেকেই হয়তো জানিনা FDA কিন্তু PRP কে Hair Transplantation এর medication হিসেবে এখনও স্বীকৃতি দেয়নি। কিন্তু efficacy- র বিবেচনায় ব্যয়বহুল হলেও এই চিকিৎসা পদ্ধতিকেই এখন সবাই গ্রহণযোগ্য ভাবছেন।
*কাপিং এর সাথে কী চুল গজানোর কোন যোগসূত্র আছে? অনেকেই আজকাল জানতে চান আমাদের কাছে।
মাথায় বিভিন্ন রোগের জন্যেই দেখা যায় কাপিং পয়েন্টস রয়েছে। আমরা যেহেতু বিভিন্ন রোগের জন্যেই কাপিং করি তাই মাথাতেও সংশ্লিষ্ট রোগের জন্যে কাপিং করা হয়েছে বিভিন্ন রোগীর!
আমরা দেখলাম, রোগীদের ভাষ্যমতে এসব জায়গাগুলোতে নাকি খুব দ্রুত চুল গজাচ্ছে এবং আশেপাশের জায়গাগুলোতেও চুল পড়ে যাওয়ার মাত্রা বেশ কমে যাচ্ছে!
থিওরিটিক্যালি চুল গজানোর ক্ষেত্রে কাপিং এর উল্লেখযোগ্য অবদান আছে। এ ব্যাপারে আমরা নিশ্চিত অনেক আগে থেকেই ! যেভাবে কাপিং কাজ করে তা সত্যিই ভীষণ আশান্বিত হবার মত!
১) Androgenic Alopecia তে Causative pathologic substance হল DHT(Dihydrotestosterone)। প্রতি সেশন কাপিং এ মাথার তালুর আক্রান্ত জায়গা থেকে কাপিং ব্লাড এর সাথে প্রচুর DHT বের হয়ে আসে। এটি কাপিং এর excretory benefit এর একটা উদাহরণ।
২) অন্যদিকে কাপিং এর মাধ্যমে তৈরি হওয়া নাইট্রিক অক্সাইড একটি potent vasodilator।তাই কাপিং local healthy blood circulation promote করে।
চুলের চিকিৎসায় সব প্রচলিত পদ্ধতিগুলোর ব্যর্থতা বা অনিশ্চয়তা দেখে কাপিং কে এদের মাঝে নিয়ে আসার কোন ইচ্ছে ছিল না আমাদের। এর একটা কারন বেশিরভাগ রোগে এই সুন্নাহ চিকিৎসাটি এরই মাঝে আমাদের রোগীদের মাঝে তার নির্ভরতার জায়গা করে নিয়েছে! সেটা ধরে রাখাটা আমাদের জন্যে দরকার!
Hairfall এর চিকিৎসায় কথা দেয়ার ঝুঁকি আছে, অনিশ্চয়তা আছে!
পরে আমরা ভেবে দেখলাম যদি কারো উপকারে আসে তার জন্যে হলেও আমরা চেষ্টা করে দেখতে পারি!
রাসূল সা: হিজামা কে 'সর্বোৎকৃষ্ট' চিকিৎসা বলেছেন। তাহলে চুলের চিকিৎসাতেই বা কেন নয়?
যে লাভগুলো হিজামা করালে হবে :
১) এটি একসাথে দুটি pathologic target কে cover করে।
তাই চুল পড়া বন্ধে প্রতিদিন শ্যাম্পু,লোশন,স্প্রের অত্যাচার থেকে বাঁচতে কাপিং নতুন আশা বয়ে নিয়ে আসবে।
২) খরচের দিক বিবেচনায় কাপিং/হিজামা PRP এর তুলনায় অনেক বেশি সহজলভ্য।
৩) Prophetic Medicine এর অংশ হিসেবে হিজামা একদম নিরাপদ।
৪) চিকিৎসা হিসেবে একটা সুন্নাহ কে বেছে নেওয়ার spiritual benefits and rewards তো আছেই!
৫) মাথা ব্যথা বা রিলাক্সেশন এ মাথায় কাপিং অত্যন্ত উপকারী।চুলের জন্যে চিকিৎসা নিলেও এই উপকারগুলো বাড়তি পাওয়া।
কাপিং সেশন প্ল্যান :
মোট সেশন : ৪ টি
প্রথম সেশন এর ১৫ দিন পর ২য় সেশন।
২য় সেশন এর ১ মাস পর ৩য় সেশন এবং এর ঠিক ১ মাস পর ৪র্থ সেশন।
এরপর চুলের যত্নে ৩ মাস পর পর অথবা রেসপন্স এর উপর নির্ভর করে ৬ মাস পর পর হিজামা/কাপিং করানো যেতে পারে।
যে বিষয়গুলো মাথায় রাখতে হবে :
১) একটা লজিক্যাল এক্সপেক্টেশন রাখবেন।Response vary from person to person! Its widely dependent on existing damage to the hair follicles!
কাপিং করে সাথে সাথেই অজস্র চুল আশা করবেন ব্যাপারটা একদম সেরকম না! কাপিং ন্যাচারাল গ্রোথ বুস্ট আপ করে।তাই কাপিং করে হেয়ার ট্রান্সপ্লান্টেশন এর মত কৃত্রিম পরিবর্তন আশা করা যাবে না।
প্রতিটা সেশনেই পরিবর্তন আসে।তাই ধৈর্য্য রাখতে হবে কমপক্ষে ৩ মাস। চুল পড়ার হার যে কমে যাচ্ছে এই পরিবর্তন টা সবার আগে বুঝতে পারা যাবে।
২) ট্রিটমেন্ট শিডিউল মেনে চলার মানসিকতা থাকতে হবে।মাঝপথে চিকিৎসা বন্ধ করবেন না।সেক্ষেত্রে বুঝে শুনে প্ল্যান করুন।
৩) হিজামার ব্যাপারে যেটা ভাল দিক সেটা হল এর কোন সাইড এফেক্ট নেই যা ওষুধগুলোতে আছে!তাই দীর্ঘদিল বিনা সংকোচে কাপিং এর উপর নির্ভর করা যায়।রোজ রোজ চুলের পেছনে সময় দেয়ার ঝামেলাও নেই।
তাই চুলের চিকিৎসায় যারা হাঁপিয়ে উঠেছেন তারা এই সুন্নাহ চিকিৎসা পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারেন। আমরা বিশ্বাস করি যেকোন চিকিৎসা পদ্ধতির চেয়ে কাপিং/হিজামা আপনার কাছে অনেক বেশি কার্যকর ও সহজতর মনে হবে।
#যোগাযোগঃ ফোন: ০১৯২৬৯৯৪১৮৮ নতুন বুধপাড়া , রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় রেললাইন সংলগ্ন ।
**মাথায় হিজামা করলে বিশেষ ভাবে কিছু রোগের উপকার হয় সেটা আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হল।**
১। মাইগ্রেন জনিত দীর্ঘ মেয়াদী মাথা ব্যথা এবং সাধারন মাথা ব্যথা।
২। উচ্চ রক্তচাপ।
৩। রক্ত দূষন।
৪। ঘুমের ব্যঘাত।
৫। স্মৃতি ভ্রষ্টতা।
৬। ঘাড়ে ব্যথা।
৭। হরমোনাল সমস্যা।
৮। সাইনুসাইটিস।
৯। মানসিক সমস্যা।
১০। চুলপড়া।
১১। পারকিনসন্স ডিজিজ।
১২। ব্রেইন ডিজিজ।
১৩। মাদকাসক্তি।
১৪। প্যরালাইসিস।
১৫। যাদুটোনার সমস্যা ইত্যাদি।
**যেহেতু মাথায় হিজামা করার বিশেষ কিছু উপকারিতা আছে এই জন্য সেটা আলাদা ভাবে উল্লেখ করা হল।**
আব্দুল্লাহ বিন আব্বাস (রা:) বর্ণনা করেন, রাসুলূল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন ইহরাম অবস্থায়, তখন একগুঁয়ে মাথা ব্যথার জন্য হিজামা ব্যবহার করেন। (বুখারী-৫৭০১)
সালমা (রঃ) বলেন. যখন কেউ রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর নিকট এসে মাথা ব্যথার কথা বলত, তিনি তাদেরকে হিজামা লাগানোর কথা বলতেন। (আবু দাউদ-৩৮৫৮)
**কালো যাদু বা কুফরী বিনষ্ট করার উদ্দেশ্যে**
ইবনুল কাইয়ুম রহ: মন্তব্য করেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যখন যাদু দ্বারা পীড়ীত হন তখন তিনি মাথায় কাপিং থেরাপি গ্রহন করেন এবং এটাই সবচেয়ে উত্তম ঔষধ যদি সঠিক ভাবে করা হয়। (যাদুল মায়াদ ৪/১২৫-১২৬)

কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.